Maithon: উড়ু-উড়ু মন? যান মাইথন

এর পাশাপাশি বেশ কিছু বেসরকারি হোটেল আছে। নেট সার্চ করলে পাবেন সন্ধান। থাকতে পারেন সেখানেও। খাওয়াদাওয়ার কোনও অসুবিধা হবে না।

Must read

পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমানায় অবস্থিত মাইথন। আছে বাঁধ, জলাধার, মন্দির, ছোট-বড় পাহাড়। এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বরাবর আকৃষ্ট করে ভ্রমণপিপাসুদের। ঘুরে এসে লিখলেন অংশুমান চক্রবর্তী

আরও পড়ুন-Lakhimpur: লখিমপুর: তদন্তে নজরদার নিয়োগ

দোরগোড়ায় শীত। মনের ডানা উড়ান চাইছে? টুক করে দুদিনের জন্য মাইথন ঘুরে আসতে পারেন। কেটে যাবে বন্দি-জীবনের একঘেয়েমি।
কী আছে মাইথনে? পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড সীমানায় বরাকর নদের উপর ১৫৭১২ ফুট দীর্ঘ ও ১৬৫ ফুট উঁচু বাঁধ এবং ৬৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে দেখার মতো জলাধার। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন পরিচালিত মাইথন বাঁধটি পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডকে আলাদা করেছে। বাঁধ তৈরি হয়েছিল মূলত বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য। আশেপাশে আছে ছোট-বড় অজস্র পাহাড়।

আরও পড়ুন-বিজেপির গুন্ডাবাহিনীরা মিছিলে সন্ত্রাস, আহত হয় তৃণমূল কর্মী

পাহাড়ের কোলে গাছে গাছে ফুটে থাকে নানারকমের চেনা-অচেনা ফুল। একা একা নয়, ফুলগুলো দলবেঁধে সৌন্দর্য ছড়ায়। এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বরাবর আকৃষ্ট করে ভ্রমণপিপাসুদের। মাইথন বাঙালিদের খুব প্রিয় বেড়ানোর জায়গা। লেকে বোটিং-এর সুব্যবস্থা আছে। পর্যটকদের আশায় নৌকা সাজিয়ে বসে থাকেন মাঝিরা। লেকের জলে বোটিং করতে করতে সূর্যাস্ত দেখতে দারুণ লাগবে। সকালে ঝলমলে পরিবেশ। সন্ধেবেলায় লেখা হয়ে যায় নির্জনতার মহাকাব্য। নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয় অসংখ্য জোনাকি, আকাশের কালো ক্যানভাসে ফুটে ওঠে বিন্দু বিন্দু তারা।

আরও পড়ুন-চিংড়িঘাটায় বন্ধ হোক দুর্ঘটনা ,মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ পুলিশকে

প্রসঙ্গত বলে রাখি, মাইথন নামের উৎপত্তি মাই-কা-থান থেকে। এই মা হচ্ছেন দেবী কল্যাণেশ্বরী। আসানসোলের দিক থেকে যাওয়ার সময়ে প্রথমেই কল্যাণেশ্বরী মায়ের দর্শন করতে হয়। এই মন্দির প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো। দেবীর দর্শন করে পুজো দিতে পারেন। এখানে আছে চিরসবুজ হ্যাংলা পাহাড়। মাইথন থেকে প্রায় ১৬ কিমি দূরে আছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের আরেক বাঁধ পাঞ্চেত ড্যাম, পাঞ্চেত পাহাড়, বড়ন্তি ও গড়পঞ্চকোট। গড় পঞ্চকোটের প্রধান আকর্ষণ পঞ্চরত্ন মন্দির। এই চিত্তাকর্ষক জায়গাগুলোও ঘুরে দেখার মতো। প্রকৃতি এখানে বসেছে রূপের পশরা সাজিয়ে।

আরও পড়ুন-আইসিসিতে বদল ,বিদায় কুম্বলে , ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান সৌরভ

বাঁধের নিচে পাহাড়ের ১৩৫ ফুট ভিতরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। কীভাবে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, দেখে আসা যায়। তার জন্য প্রয়োজন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের পিআরও-র অনুমোদন। বাঁধের নীচে রয়েছে ডিয়ার পার্ক। ছোটরা সঙ্গে থাকলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন। শীতে পরিযায়ী পাখির মেলা বসে মাইথনের লেকে। পাশাপাশি আছে আঞ্চলিক পাখিরাও। সারাক্ষণ চলে তাদের কিচিরমিচির। একা নয়, মাইথন গেলে দলবেঁধে যাবেন। তবে বেড়াতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধির কথা ভুলবেন না যেন! পরবেন মাস্ক, পরিষ্কার রাখবেন হাত, বজায় রাখবেন শারীরিক দূরত্ব। সঙ্গে রাখবেন জীবাণুনাশক স্প্রে, করোনার দুটি টিকার সার্টিফিকেট। এ-সবকিছু মানলে শীতের দিনে মাইথন ভ্রমণ কবিতার মতো সুন্দর হয়ে উঠবে।
কীভাবে যাবেন?

আরও পড়ুন-তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ল ত্রিপুরার সরকারি কর্মীরা

কলকাতা থেকে মাইথনের দূরত্ব প্রায় ২৩১ কিলোমিটার। রেলপথে মাইথন যাওয়া যায় বরাকর বা কুমারডুবি হয়ে। পাশাপাশি আছে সড়কপথ। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের (এসবিএসটিসি) বাস পাওয়া যায় আসানসোল শহর পর্যন্ত। আসানসোল যাওয়া যায় ট্রেনেও। এখান থেকে মাইথন প্রায় ২২ কিমি। গাড়ি ভাড়া করেও যাওয়া যায়। এসবিএসটিসি বাসের জন্য অনলাইন বুকিং https://online.sbstcbooking.co.in। চাইলে কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করেও মাইথন যেতে পারেন।

আরও পড়ুন-স্বাধীকারভঙ্গের নোটিশ

কোথায় থাকবেন?
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের মুক্তধারা ট্যুরিজম প্রপার্টিতে (আগেকার মাইথন ট্যুরিস্ট লজ) থাকা যায়। এই ভবনটি সবুজ টিলার উপরে। সেখান থেকে পাহাড়ে ঘেরা মাইথন জলাধার দেখতে খুব সুন্দর লাগে। অনলাইন বুকিং https://wbtdcl.com/। এ ছাড়াও দ্বীপের মাঝে আছে মজুমদার নিবাস। জলাধারের উপর দিয়ে যেতে হয়। আছে সংযোগ পথ। আগে যোগাযোগ করে যাওয়াই ভাল।

এর পাশাপাশি বেশ কিছু বেসরকারি হোটেল আছে। নেট সার্চ করলে পাবেন সন্ধান। থাকতে পারেন সেখানেও। খাওয়াদাওয়ার কোনও অসুবিধা হবে না। ছোটখাটো দোকানের পাশাপাশি আছে হোটেল। মনে রাখবেন আতিথেয়তা, পরিষেবা এবং আনুষঙ্গিক ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন অন্য অন্যান্য রাজ্যের পর্যটনের তুলনায় অনেক এগিয়ে।

Latest article