রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই সাকেতের হয়রানি, নির্বাচন কমিশনে প্রতিবাদ জানাল তৃণমূল

গুজরাত নির্বাচনের প্রচারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির মতো শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী না হলে দেশের প্রতিটি শহরে আফতাবের জন্ম হবে

Must read

নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : ট্যুইট কোনও ইস্যুই নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই মাত্র চারদিনের মধ্যে দু’বার গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেলকে। সাকেতের ট্যুইট কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায়নি বা কোনও সম্প্রদায়কে আঘাত করেনি। তা সত্ত্বেও হয়রানি। আর গুজরাতের বিজেপি দলদাস পুলিশের আচরণের পরও নিষ্ক্রিয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দিল্লিতে কমিশনের সদর দফতরে গিয়ে সোমবার এই মত জানিয়ে এল তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল।

আরও পড়ুন-যারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে

দলীয় সাংসদরা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, সাকেত গোখেলকে গ্রেফতার করা হলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা এবং বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয় কেন? কমিশনের সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। প্রতিনিধিদলে ছিলেন সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায় এবং মৌসম বেনজির নুর। সকাল সাড়ে ১১টায় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন তৃণমূল সাংসদরা। কমিশনে তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, পরেশ রাওয়াল, হিমন্ত বিশ্বশর্মাদের মন্তব্য নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করে মোরবি ইস্যুতে মাত্র একটি ট্যুইট করার জন্য কেন অন্যায়ভাবে দলের নেতা সাকেত গোখেলকে গ্রেফতার করা হল? প্রথমবার জামিন পাওয়ার পরও দ্বিতীয়বার গ্রেফতারি কোন অভিযোগে? তৃণমূলের অভিযোগ শুনে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হবে বলেও তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
উল্লেখ্য, গুজরাত নির্বাচনের প্রচারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির মতো শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী না হলে দেশের প্রতিটি শহরে আফতাবের জন্ম হবে। দিল্লিতে লিভ ইন পার্টনার আফতাব পুনাওয়ালার হাতে খুন হন শ্রদ্ধা ওয়াকার। ঘটনায় লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলে বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করা হয়। এই বিতর্কিত মন্তব্য করলেও অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। একইভাবে অভিনেতা এবং বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়াল বাঙালিদের মৎস্যপ্রীতি নিয়ে অপমানজনক ও বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সমস্ত বিরোধী দল একযোগে সরব হলেও এক্ষেত্রেও নীরব ছিল কমিশন।

আরও পড়ুন-বিহারে ফাংশানে নাচতে গিয়ে মৃত্যু হল তরুণীর

দুটি বিষয়ই তুলে ধরা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। অন্যদিকে, মোরবি সেতু বিপর্যয় এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গুজরাত সফরের খরচ নিয়ে একটি ট্যুইট শেয়ার করায় গ্রেফতার হন সাকেত গোখেল। প্রথমে জয়পুরে এবং পরে আমেদাবাদ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশ। তৃণমূলের দাবি, একই এফআইআরের ভিত্তিতে কখনও কোনও অভিযুক্তকে দু’বার গ্রেফতার করা যায় না। তৃণমূলের প্রশ্ন, নিজের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার বাইরে গিয়ে কীভাবে গ্রেফতার করতে পারে মোরবি থানার পুলিশ? কার নির্দেশে এগুলো হয়েছে? দ্বিতীয় এফআইআর কী করে হল? প্রতিনিধিদলের সদস্য সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে ট্যুইটের জন্য সাকেত গোখেলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই ট্যুইটের কোনও জায়গায় আইন অমান্য করা হয়নি।

Latest article