স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট জানাল রাজনৈতিক হিংসায় শীর্ষে ত্রিপুরা

ন্যাশনাল ক্রাইমস রেকর্ড ব্যুরোর ২০২১ সালের রিপোর্ট বলছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে শীর্ষে রয়েছে ত্রিপুরা।

Must read

প্রতিবেদন : রাজনৈতিক হিংসায় এগিয়ে ত্রিপুরা। গুন্ডারাজ কায়েম করার নিরিখে বিজেপি শাসিত এই রাজ্য প্রথম। জানাল খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট। এনসিআরবির সাম্প্রতিক রিপোর্টেই স্পষ্ট, ত্রিপুরায় বিজেপি শাসনকালে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ও বিরোধীদের উপর দমনপীড়নের প্রকৃত ছবি।

আরও পড়ুন-মুক্তি পাচ্ছেন না কাপ্পান

ঘটনাচক্রে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা কয়েকদিন আগে দাবি করেছিলেন, ত্রিপুরায় রাজনৈতিক অশান্তি নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দফতরের অধীনস্থ এনসিআরবির রিপোর্ট স্পষ্ট বলছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা রাজনৈতিক হিংসায় শীর্ষে। গুন্ডামি ও হিংসার ঘটনা লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে এই বিজেপি রাজ্যে। এমনকী আইনশৃঙ্খলার অবনতির বিষয়টি এতটাই উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের এ বিষয়ে ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার পরামর্শ দিয়েছে এনসিআরবি।

আরও পড়ুন-বিজেপি-সিপিএম সম্পর্কের অভিযোগ তুলল কংগ্রেস

ন্যাশনাল ক্রাইমস রেকর্ড ব্যুরোর ২০২১ সালের রিপোর্ট বলছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে শীর্ষে রয়েছে ত্রিপুরা। ২০২১ সালে রাজ্যে ৬৪টি হিংসার ঘটনায় ১৩৬ জন জখম হয়েছেন। হিংসার ঘটনায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মণিপুরে এসময় এরকম ঘটনা দুটি ঘটেছে। বাকি ছয় রাজ্যে গত বছর রাজনৈতিক হিংসার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পাশাপাশি পুলিশের উপর সর্বাধিক আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে ত্রিপুরায়। ২০২১ সালে এই রাজ্যে পুলিশ ১১ বার আক্রান্ত হয়েছে। বিজেপি শাসিত অসমে পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ১০টি। মণিপুরে ৭টি। অন্য রাজ্যে পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর নেই। ২০২১ সালে ত্রিপুরায় ১১৭টি দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন ২৫৯ জন। অথচ তার আগের বছর ২০২০ সালে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছিল ২২টি। বিজেপি এরাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরই শান্ত ত্রিপুরা যে ক্রমশই অশান্ত হয়ে উঠেছে এনসিআরবির রিপোর্ট তারই প্রমাণ।

আরও পড়ুন-সেকেন্দ্রাবাদে পুড়ে ছাই গাড়ির শোরুম, মৃত ৮

দেখা যাচ্ছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে ত্রিপুরায় শতাধিক রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে। মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, এমনকী সাংবিধানিক পদাধিকারীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। বিরোধী দলের অফিস ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে। বাদ যায়নি সরকারের সমালোচনা করা সংবাদমাধ্যমও। ত্রিপুরার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক হিংসা ও দাঙ্গার ঘটনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এনসিআরবি রিপোর্ট অনুসারে ক্রমবর্ধমান দাঙ্গা ও রাজনৈতিক হিংসার ঘটনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসক দল বিজেপির দিকে।

আরও পড়ুন-ফের এজি হচ্ছেন রোহতগি

এনসিআরবির বেশ কয়েকজন শীর্ষকর্তা ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার উদ্বেগজনক পরিস্থিতি আলাদাভাবে খতিয়ে দেখেছেন। গোটা বিষয়টিতে তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেবের প্রতিক্রিয়া, উন্নয়নে খরচ না করে কোটি কোটি টাকা ত্রিপুরায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার জন্য ব্যবহার করছে বিজেপি সরকার। আমাদের দল বহুদিন এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসছে। উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে রাজনৈতিক হিংসায় ত্রিপুরা যেভাবে শীর্ষে উঠে এসেছে তা লজ্জাজনক। সাধারণ মানুষ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়।

Latest article