সংঘর্ষের আগুনে পুড়ছে মণিপুর, সেনার ফ্ল্যাগমার্চ

তোরবাং এলাকায় উপজাতি ও অ-উপজাতিদের মধ্যে হঠাৎই সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

Must read

প্রতিবেদন : বিজেপি শাসিত মণিপুরে যেন আগুন জ্বলছে। রাজধানী ইম্ফল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বাড়ি, গাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের ৮ জেলায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। আগামী ৫ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। রাস্তায় চলছে সেনাবাহিনীর ফ্ল্যাট মার্চ। মণিপুরের হিংসা কবলিত এলাকায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স পাঠিয়েছে কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আধাসেনা। চলছে রুট মার্চ। রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংকে ফোন করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যের পরিস্থিতি জানার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন শাহ।

আরও পড়ুন-‘কোনও হিন্দু, কোনও মুসলমান, কোনও রাজবংশী, কোনও মতুয়া, কেউ কিন্তু দাঙ্গা চায় না’ বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন অলিম্পিক পদকজয়ী বক্সার মেরি কম। এই আন্তর্জাতিক অ্যাথলিট প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ট্যুইট করেছেন, আমার রাজ্য মণিপুর জ্বলছে। দয়া করে সাহায্য করুন। একই সঙ্গে মেরিকম তাঁর ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকেও ট্যাগ করেছেন।
সম্প্রতি আদিবাসীদের সঙ্গে শুরু হয়েছে জনজাতিদের সংঘাত। দীর্ঘদিন ধরেই মণিপুরের মেটেই জনজাতিকে তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়ার দাবি উঠেছে। বিজেপি সরকার জনজাতিদের সেই দাবি মেনে নিতে চলেছে এমন ইঙ্গিত মিলেছে। তাতেই প্রবল ক্ষুব্ধ হয়েছে কুকি-সহ একাধিক আদিবাসী সংগঠন। আদিবাসীদের দাবি মেটেইরা তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি পেতে পারে না। তাদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া হলে আদিবাসীদের অধিকার বিঘ্নিত হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই পথে নেমেছেন তাঁরা। আর তাতেই অগ্নিগর্ভ হয়েছে মণিপুর।

আরও পড়ুন-মালদহে ‘ম্যাঙ্গো সুইট’ তৈরির পথ দেখালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বুধবার মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের তরফে আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে বুধবার রাত থেকে নতুন করে রাজ্যে অশান্তি ছড়ায়। বুধবারের ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যুর পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। রাতেই জেলার একাধিক এলাকায় মারধর, দোকানপাট ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন লাগানোর মতো ঘটনা ঘটেছে।
হিংসা ছড়িয়ে পড়ার কারণে প্রায় ৯০০০ মানুষকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সেনা শিবির এবং সরকারি অফিস চত্বরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে ছিল চাপা উত্তেজনা। রাস্তায় মানুষজনের আনাগোনা তেমন ছিল না। তবে শুধু মেটেইদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া নয়, সম্প্রতি রাজ্যে তিনটি গির্জা ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, বুধবার ছাত্র সংগঠনের ডাকা মিছিলে হাজার হাজার আন্দোলনকারী অংশ নিয়েছিল। তোরবাং এলাকায় উপজাতি ও অ-উপজাতিদের মধ্যে হঠাৎই সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

Latest article