আপত্তির চিঠি বন্দরের, রাজ্য জানাল বিদ্যুতের কাজ চলবে

হলদিয়ার দুই প্রত্যন্ত গ্রাম বিষ্ণুরামচক ও সৌতনপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া নিয়ে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের লড়াই তুঙ্গে উঠল

Must read

প্রতিবেদন : হলদিয়ার দুই প্রত্যন্ত গ্রাম বিষ্ণুরামচক ও সৌতনপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া নিয়ে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের লড়াই তুঙ্গে উঠল। গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতেই আপত্তি জানাল বন্দর কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বন্দরের তরফে জেলা প্রশাসনকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, ওই গ্রাম দুটি তাঁদের জমিতে। তাই ওখানে কোনওভাবেই রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারে না। এই চিঠির কথা সামনে আসতেই শুক্রবার সকালে গ্রামে পৌঁছে যান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

আরও পড়ুন-টেটে বাড়তি মেট্রো

সৌতনপুরে এক জনসভায় কুণাল ঘোষণা করেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ যত বাধাই দিক না কেন, দুটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁকে এই আশ্বাস দিয়েছেন। গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর এই বার্তাও পৌঁছে দেন কুণাল। কুণাল বলেন, বিদ্যুৎমন্ত্রী তাঁকে বলেছেন, জমি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ দফতর আইনি পরামর্শ নিয়েই এগোচ্ছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রুলিং আছে। জমি নিয়ে কোনও আইনি সমস্যা বা মামলা থাকলে তা নিজের মতোই চলবে। কিন্তু সেই মামলার কারণে ওই জমিতে বসবাসকারীদের জল ও বিদ্যুৎ থেকে কোনওভাবেই বঞ্চিত করা চলবে না। এটা তাঁদের অধিকার। এই অধিকার কোনওভাবেই খর্ব করা যাবে না। এই রায়কে সামনে রেখেই বিদ্যুৎ সংযোগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে বদ্ধপরিকর মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এরপর গ্রামবাসীদের অনুরোধে গ্রামে যান কুণাল। সেখানে মহিলারা তিলক পরিয়ে ফুল দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। সেখানে একটি চাটাই বৈঠক হয়। তাঁরা বলেন, এতদিন শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছিল। এবার বিদ্যুৎ সংযোগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার তাঁরা আনন্দিত।

আরও পড়ুন-দূষণ রুখতে ৮ বছরের মধ্যে আরও ই-বাস

সভায় প্রাক্তন চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, এটাই তৃণমূল কংগ্রেস। আমরা যা বলি তাই করি। কুণাল বলেন, স্বাধীনতার এতদিন পরেও বিদ্যুৎহীন দুটি গ্রাম। ভাবা যায় না। বাম জমানা থেকে অধিকারী জমানা পেরিয়ে এসে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটেনি বিষ্ণুরামচক ও সৌতনপুরের। এখনও পর্যন্ত চারশোর বেশি নতুন সংযোগের আবেদন জমা পড়েছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীদের রাজ্য সরকার একেবারে ন্যূনতম মূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেবে। এরপর হুঁশিয়ারির সুরে কুণাল বলেন, রাজনীতি করছি না। অনুরোধ, এটা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। কিন্তু কেউ যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে এই প্রক্রিয়া বানচাল করার চেষ্টা করে, বাধা দেয়, তাহলে আমাদের খবর দেবেন, দু’ঘণ্টার নোটিশে চলে আসব। গ্রামবাসীরা নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই আমরাই শুয়ে পড়ব। এই প্রক্রিয়া থামতে দেব না। বিদ্যুৎমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, যদি এই নিয়ে কোনও মামলা হয়, তাহলে খোদ বিদ্যুৎ দফতরই গ্রামবাসীদের হয়ে সেই আইনি লড়াই লড়বে। কারণ, এটা মানুষের অধিকারের প্রশ্ন। সেখান থেকে কুণাল শহিদ ক্ষুদিরাম মেলা প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণ সময় কাটান। সেখানে কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। একাধিক বৈঠকও করেন। দুটি কারখানার কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন।

Latest article