৪ নভেম্বর গোকুলনগরে সমাবেশ, এখন থেকেই চাঞ্চল্য, দল ছাড়লেন বিজেপির নন্দীগ্রামের বিদ্রোহীরা

মঙ্গলবার দল ছাড়লেন নন্দীগ্রাম বিজেপির বিদ্রোহীরা।

Must read

প্রতিবেদন : মঙ্গলবার দল ছাড়লেন নন্দীগ্রাম বিজেপির বিদ্রোহীরা। দলবদলু শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তাঁর সমস্ত অনৈতিক কাজ ও তুঘলকি আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আগেই বিজেপির সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের জনপ্রিয় ও শক্তিশালী দুই নেতা বটকৃষ্ণ দাস ও জয়দেব দাস এবং তাঁদের সহযোগীরা। মঙ্গলবার এঁরা সকলেই বিজেপি ছাড়লেন। এই ঘটনায় তোলপাড় গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপির অন্দরে। ধাক্কা লেগেছে বঙ্গ বিজেপিতেও। নন্দীগ্রামে এভাবে বিজেপিতে ধস নামায় মাথায় হাত জেলা বিজেপির সিন্ডিকেট নেতা ও তাঁর অনুগামীদের। আগামী ৪ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের গোকুলনগরে জনসভা করবে তৃণমূল কংগ্রেস। শুরু হয়ে গিয়েছে সভার প্রস্তুতি।

আরও পড়ুন-ঋতু বদলের মোকাবিলায়

মঙ্গলবার বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসা বটকৃষ্ণ দাস ও জয়দেব দাস এবং তাঁদের সহযোগীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষের। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এই মুহূর্তে সেখানে রয়েছেন তিনি। বিজেপি ছেড়ে আসা নেতাদের সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হন সকলে। সঙ্গে ছিলেন এই জেলায় দলের সভাপতি ও প্রবীণ নেতা সৌমেন মহাপাত্র ও অন্যরা। এবিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কুণাল বলেন, লোডশেডিংয়ে জেতা দলবদলু নেতার বিরুদ্ধে, তার অপকর্ম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ করে বটকৃষ্ণ-জয়দেব দাসরা বিজেপি ছেড়েছেন। আমি দলের কাজে জেলায় রয়েছি। ওঁদের সঙ্গে আচমকা দেখা হয়ে গেল। সকলে মিলে চায়ের সঙ্গে আড্ডা হল। বাকি যা বলার ৪ নভেম্বর গোকুলনগরের সভায় বলব আমরা। কুণালের সংযোজন, এই বটকৃষ্ণ-জয়দেবরা না থাকলে লোডশেডিং বিধায়ক নন্দীগ্রামে পা রাখতে পারত না। বটকৃষ্ণ তো ওদের নির্বাচনী আহ্বায়ক ছিলেন। ওঁরাই এখানকার মানুষকে নিয়ে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়েছিলেন। যে বিজেপি ওঁরা শুরু করেছিলেন, আর এখন যে বিজেপি ছাড়লেন তার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। বটকৃষ্ণ-জয়দেবরা নিজেরাও সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, কীভাবে দলবদলু-ধান্দাবাজ-অত্যাচারী শুভেন্দু ও তার দলবল এই জেলায় বিজেপিকে কব্জা করেছে। যা খুশি তাই করছে। একটা সময় তৃণমূলে থেকে এরাই অত্যাচার চালিয়েছে। এরাই আবার বিজেপিতে এসে অত্যাচার চালাচ্ছে। এসব মেনে নিতে না পেরেই বিজেপি ছাড়লেন ওরা। নন্দীগ্রামের মানুষ অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেডকে প্রত্যাখান করছে এটা এখন থেকে প্রতি মূহুর্তে বুঝতে পারবে দলবদলু – বেইমান শুভেন্দু। বিশ্বাসঘাতকদের রাজনীতি আর এখানে চলবে না। আদি বিজেপি নেতারা ওদের এই অত্যাচার মানতে পারছেন না।

আরও পড়ুন-হিরণকে পাল্টা দিলেন দেব

সদ্য বিজেপি ছাড়া নেতারা এই অঞ্চলের সমস্ত সামাজিক কাজে যুক্ত থাকেন। মানুষের পাশে থাকেন। আমরাও চাই ওঁরা মাথা উঁচু করেই সমাজে চলুন। তবে ওঁরা যেহেতু শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সব বলেছেন, ওর অপকর্মের কথা মানুষকে জানিয়েছেন, তাই ওঁরা হামলা ও প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছেন। আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে ওঁদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছি। বক্তব্য কুণাল ঘোষের।
তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব কুণাল ঘোষকে কাঁথি ও তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-টেটের নম্বর প্রকাশ, পর্ষদের ভাবনা জানতে চায় কোর্ট

হলদিয়া পুরভোট ও আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের সভাপতি- চেয়াম্যানসহ অন্যান্যরা যেমন দায়িত্ব সামলাবেন, তেমনই তাঁদের মধ্যে সমন্বয়কারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন কুণাল ঘোষ। দলের নির্দেশ ও গাইডলাইন মেনে, জেলা ও ব্লক কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবেন তিনি। মঙ্গলবারই পূর্ব মেদিনীপুর পৌঁছেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-মহানগরীর পথে ১২০০ বৈদ্যুতিক বাস

নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল বলেন, পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে আমি নতুন দায়িত্ব হিসাবে দেখছি না। আমাকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন। হলদিয়াকে কেন্দ্র করে দেখতে বলেছেন। আমি সৈনিক হিসাবে দেখব। আমি সাধ্যমতো সাহায্য করব। আমাকে সময় দিতে হবে। এখানে থাকার একটা ব্যবস্থা করা হল। আজ অফিস নেওয়া হল। জেলার সব দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা এসেছেন। তাঁর সংযোজন, আমি দলের অনুগত এবং খারাপ সময়ের সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে কখনও পিছিয়ে আসিনি। এ বারও পিছিয়ে আসার প্রশ্ন নেই। সংগঠন দেখার কাজটা মূলত জেলার দায়িত্বে থাকা লোকজনই করবেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে পূর্ব মেদিনীপুরে সকলের মধ্যে সমন্বয় সাধনের কাজ করতে বলেছেন। সর্বস্ব দিয়ে সহযোগী হিসেবে আমি তাই করব।

Latest article