ছিঃ! বিজেপি, ছিঃ!

ভার্বাল ডায়েরিয়াতে আক্রান্ত ভারতীয় জঞ্জাল পার্টির ছোট-বড়-মেজ-সেজ কার্যকর্তারা শিষ্টাচারকে শিকেয় তুলে ফের নেমে পড়েছেন নোংরা কথার বন্যা বওয়াতে।

Must read

অতঃপর কুকথার লকগেট খুলে গিয়েছে। ভার্বাল ডায়েরিয়াতে আক্রান্ত ভারতীয় জঞ্জাল পার্টির ছোট-বড়-মেজ-সেজ কার্যকর্তারা শিষ্টাচারকে শিকেয় তুলে ফের নেমে পড়েছেন নোংরা কথার বন্যা বওয়াতে। কিন্তু তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। পুনরায় হতাশার স্তূপ হবেই হবে এঁদের আশ্রয়। মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে সম্পূর্ণ পরাজিত হওয়ার পর কুরুচিকর, নোংরা কথাবার্তা বলা বা অসাংবিধানিক শব্দ প্রয়োগ করে প্রাধান্য পাওয়া বঙ্গ বিজেপির ও বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের এখন একমাত্র কৌশল হয়ে উঠেছে। এই ক্ষেত্রে বিজেপির বর্তমান সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন যা এখন বর্তমান বিরোধী নেতা সহ ছোট-বড় বা মাঝারি নেতারাও তাঁকে অনুসরণ করছেন। যে কোনও উপায়ে তাঁদের প্রচার দরকার।

আরও পড়ুন-আগামী ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর মহামিছিল, খুঁটিপুজো থেকে শামিলের ডাক

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যখন লড়াই করার মতো কিছুই নেই, ঠিক তখনই এই ধরনের মন্তব্যকে হাতিয়ার করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর তাই প্রতিফলন ঘটেছে দিলীপবাবুর কথায়। উনি ভুলে যাচ্ছেন যে এই ঠুনকো প্রচার পাবার আশায় তিনি এবং তাঁর দল মারাত্মক পথের পথচারী হয়েছেন, যা বাংলা তথা ভারতবর্ষের শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে একেবারেই মেলে না। আসলে আমার দৃঢ় ধারণা দিলীপবাবু এইসব কথা বলেন, শুধুমাত্র সস্তায় প্রচার পাবার জন্য এবং তার সঙ্গে ওঁর অন্য নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য। এবং একই ভুল তারা করেছিল ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে। উনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন যে সেদিন তারপরে কী সাংঘাতিক পরিণতি হয়েছিল। কারণ বাংলার মানুষ এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা কোনও দিনই সমর্থন করেন না এবং ভবিষ্যতেও করবেন না। বাংলার মানুষ এক অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী এবং এই সংস্কৃতিকে বিজেপি কোনও দিনই মর্যাদা দিতে পারেনি এবং সেই কারণেই আজকে দিলীপবাবুদের দলের এই জীর্ণ অবস্থা। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি শুধু ক্ষমতা পেতে চেয়েছে, মানুষের মননকে বুঝতে পারেনি। আর এখনও বুঝতে পারেনি বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এইসব মন্তব্য ওঁরা করছেন। উনি হয়তো জানেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের মনে, মানুষের হৃদয়ে বাস করেন। রাজ্যবাসী তাঁকে শুধুমাত্র নেত্রী নয়, ‘নিজের মেয়ে’ বলেই ভাবে।

আরও পড়ুন-করোনা বাড়ছে সতর্ক রাজ্য

ভাবতে অবাক লাগে একটি সর্বভারতীয় দলের সহ-সভাপতি ভারতবর্ষের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশনেত্রীর সম্বন্ধে কী করে এই মন্তব্য করেন। রাজনৈতিক ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার সমস্ত রাজনৈতিক দলের আছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে, একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জনপ্রিয় নেত্রীর সম্বন্ধে নিম্নমানের মন্তব্য করবে আর এই দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব কোনও ব্যবস্থা নেবে না বক্তার বিরুদ্ধে। এটা প্রমাণ করে সেই রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং তাঁর দল সম্পূর্ণভাবে ভেতর থেকে নিঃস্ব বা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন-২০২৪ সালে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী

এঁদের কী যোগ্যতা আছে যেখানে দাঁড়িয়ে জননেত্রী সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য করেন! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নন। তিনি বর্তমানে ভারতবর্ষের সবথেকে জনপ্রিয় নেত্রী। যিনি সমাজকল্যাণমূলক কাজ, মানবকল্যাণের জন্য আজকে দেশের সর্বত্র পূজিতা হন। আসলে দিলীপবাবু জানেন আজকের দিনে তাঁর দলকে যদি কেউ সত্যি এক কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়েছেন, তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং নেত্রীর জনপ্রিয়তা সারা দেশ জুড়ে যেভাবে বাড়ছে তাতে বিজেপির চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই এই ব্যক্তি-আক্রমণের রাস্তায় যাচ্ছেন দিলীপবাবুরা। কিন্তু জেনে রাখুন, ভারতবর্ষের সচেতন গণদেবতা এই ব্যবহারের জন্য আপনাকে ও আপনার দলকে কোনওদিনই ক্ষমা করবে না। আপনারা এই গণতান্ত্রিক সমাজকে সম্মান না করলেও মাথায় রাখবেন, ভারতবর্ষ পৃথিবীর সবথেকে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ এবং এই দেশে গণতন্ত্রই শেষ কথা বলে। মানুষ আপনার এর আগে করা অনেক কুরুচিকর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আরও মোক্ষম জবাব পাবেন। আজকে জননেত্রীকে অপমান করে যে ভুল আপনি করেছেন তার মাশুল আপনার দলকে দিতেই হবে।
পুরো ভারতবর্ষ আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে এক নতুন ভোরের আশায়, নতুন দিগন্তের স্বপ্নে বিভোর। এইরকম সময়ে দেবীস্বরূপা, মাতৃসমা নেত্রী সম্পর্কে এই মন্তব্য ভারতীয় রাজনীতির একটি কালিমাময় অধ্যায়।

Latest article