গয়নাকথা

নারী মানেই সালঙ্কারা। তিথি অনুযায়ী এবছর ধনতেরাস আজ আর কাল দু’দিনের, তারপরেই দীপাবলি। সময়টা আলোর উৎসব তো বটেই, গয়নার উৎসবও। এই সময় গয়না কেনেন না এমন মেয়ে হাতেগোনা। কারণ, সোনা এখন ইনভেস্টমেন্টও। কেমন গয়না ভালবাসেন তাঁরা? ধনতেরাসেই বা কী কেনেন ? জানালেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পেশার নামী মহিলারা। শুনলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

দেবলীনা কুমার
মডেল

আমি সবচেয়ে ভালবাসি সোনার গয়না। ভারী ট্রাডিশনাল গয়নাই পছন্দের সঙ্গে সাবেকি সাজ ভাল লাগে। নিজের বিয়ের সাজেও আমি ট্রাডিশনাল গয়নাই পরেছিলাম। তবে ইন্দোওয়েস্টার্ন বা অন্যকিছুর সঙ্গে কন্টেম্পোরারি গয়নাও পছন্দ। হীরের গয়না ডেইলি ওয়্যারে পছন্দ। হাতে একটা ডায়মন্ড রিং থাকে সবসময়। ধনতেরাসে কিছু না কিছু কিনি তবে সেটা শুধু গয়নাই হবে এমনটা নয়। রুপো হতে পারে বা অন্য কিছু।

আরও পড়ুন-কে যায় রে…

সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
অভিনেত্রী ও রাজনীতিক

সাবেকি সোনার গয়নাই পছন্দ। কুন্দনের গয়নাও ভাল লাগে। রুপো কস্টিউম জুয়েলারি, হীরে সব ধরনের গয়নাই পরি পোশাক অনুযায়ী। বিয়ের সাজ মানে ট্রাডিশনাল লুকই সেরা। তবে সাজটা যেন চেহারার এবং গোটা আউটলুকের সঙ্গে মানানসই হয়। আধুনিক স্লিক ডিজাইনের সোনাও ভাল লাগে। ধনতেরাসে নিয়ম করে কিছু কেনা হয় না। তবে বাড়িতে একটা চল রয়েছে। ডেইলি ওয়্যারে যখন শুটে যাই, কানে একটা ডায়মন্ড ইয়াররিং, হাতে আংটি ব্যস।

আরও পড়ুন-সিত্রাং : নিরঞ্জনে বিধি ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনাও

অপরাজিতা আঢ্য
অভিনেত্রী

আমি এতটাই গয়না ভালবাসি যে আমার শাশুড়ি মা আমাকে মণিহারা বলেন। একটা সময় প্রত্যেক ধনতেরাসে গয়না কিনতাম। শুধু নিজের জন্য কিনেছি এমন নয়, প্রচুর গয়না উপহারও দিয়েছি। ট্রাডিশনাল ভারী গয়নাই ভাল লাগে। সীতাহার, গোলাপ পাতা হার, বেলকুড়ি মালা, মান্তাসা, চুড়, নেকলেস, মাথার মুকুট, ফারপো বালা, মকরমুখ বালা— বলে শেষ হবে না। বিগত দু’বছর কিছুই কিনি না। বছর কেনার ইচ্ছে রয়েছে। এখনও ঠিক করিনি। ধনতেরাসে রুপো বা সোনার কয়েন মা দেয়। আমিও কিনেছি। এখন অনেক ফ্যান্সি গয়নাও পরি। সারাক্ষণ আমার হাতে গুরুদেবের একটা সোনার চওড়া ব্রেসলেট থাকে।

আরও পড়ুন-আসছে ঘূর্ণিঝড়, কৃষকদের সতর্ক করে জারি বিজ্ঞপ্তি

অমৃতা চট্টোপাধ্যায়
অভিনেত্রী

আমি রুপোর গয়নাই বেশি পছন্দ করি। আর মায়ের পছন্দ সোনার গয়না। তবে স্টেটমেন্ট গোল্ড জুয়েলারি খুব ভাল লাগে। কস্টিউম জুয়েলারিও পছন্দ। ধনতেরাসে চেষ্টা করি মাকে কিছু উপহার দিতে। মাও আমাকে দেয়। বিয়ের কনেকে সাবেকি সোনার গয়নাতেই মানায়। আমার নিজেরও সোনা হলে সাবেকি ডিজাইন পছন্দ। একটি নামী কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হয়ে প্রচুর গয়না পরেছি যেগুলো খুব সুন্দর ছিল। গুরুদেবের একটা সোনার চওড়া ব্রেসলেট থাকে।

আরও পড়ুন-উৎসবের মাঝেই দুর্যোগের আশঙ্কা, ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বিদ্যুৎমন্ত্রীর

মধুরিমা বসাক
অভিনেত্রী

আংটি পরতে ভীষণ ভালবাসি। শুটিংয়ের জন্য খুব একটা গয়না পরাই হয় না। পোশাক অনুযায়ী গয়না পছন্দ। বড় ঝুমকো হলে সাবেকি ডিজাইন ভাল লাগে। সেটাই পরব শাড়ির সঙ্গে আর কোনও ভারী কিছু নয়। এখন আমি খুব ভারী ভারী রুপোর গয়নাও পরি। তখন অন্যরকম হয় সাজটা। ডায়মন্ডের রিংয়ের প্রতি একটা আকর্ষণ রয়েছে। ধনতেরাসে বাড়িতে নিয়ম মেনে কোনও কিছু কেনার চল দেখিনি তবে যদি আগে থাকতে ইনভেস্ট করার প্ল্যানিং থাকে তবে ধনতেরাসে কেনা হয়। বিয়ের সাজে হিসেবে সাবেকি পুরাতনী ডিজাইনের গয়নাই পছন্দ। নিজে গয়না কিনি না। কোনও ডিজাইন পছন্দ হলে মাকে পাঠিয়ে দিই, মা আমাদের দেশের বাড়ি নবদ্বীপের পুরনো যাঁরা অভিজাত স্যাকরা তাঁদের দিয়ে আমার জন্য বানিয়ে নিয়ে আসে৷

আরও পড়ুন-শুধু জল খেয়ে ৭ দিন লুকিয়ে

ড. রিমা মুখোপাধ্যায়
মনোবিদ

গয়না পরতে খুব ভালবাসি আর কেনাটাও আমার কাছে একটা ইনভেস্টমেন্ট। তাই ধনতেরাসে এবারও কিনব। তবে আমাদের সময় মনে করা হতো গয়নার দিকে নজর মানে সেই মেয়ে ডাক্তারি পড়ার যোগ্য নই। আমার পরিবারও তেমনই ভাবতো। কিন্তু তাও আমি সাজতে ভালবাসতাম। ছিমছাম সাজই পছন্দ। পাল্টে পাল্টে গয়না পরতে ভাল লাগে। সোনা, রূপো, হীরে ছাড়া ডোকরার গয়নাও খুব ভাললাগে। খুব আধুনিক স্লিক ডিজাইনের গয়নায় আমি স্বচ্ছন্দ্য তবে বিয়ের গয়না একটু ট্রাডিশনাল হলেই সুন্দর।

আরও পড়ুন-আল্লু-রাজ

কঙ্কন মুখোপাধ্যায়
গবেষক

সিলভার জুয়েলারিও এখন বেশ ট্রেন্ডি। তবে সোনার কদর অন্য। আমি হালকা গয়না ভালবাসি যদিও আমার বিয়েতে মা-বাবা চেয়েছিলেন আমি ট্রাডিশনাল ভারী গয়নাই পরি। ওটা বাবা-মায়েদের একটা সেন্টিমেন্ট। তবে সেইসব গয়না বিয়ের দিন বাদে আর পরা হয়নি খুব একটা। এখনকার আধুনিক, স্লিক ডিজাইনের হালকা গয়না ভাল লাগে। সম্প্রতি একটা রুপোর মঙ্গলসূত্র কিনেছি অনলাইনে খুব সুন্দর। ডেইলি ওয়্যার হিসেবে হীরের ছোট্ট দুল এবং আংটি পরে থাকি। আমার শাশুড়িমা ধনতেরাসে গয়না কেনেন, আমি নিজে না কিনলেও তাঁকে সঙ্গ দিই।

সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়
টেবল টেনিস প্লেয়ার

আমি সাজতেই খুব ভালবাসি তবে গয়না অকেশন ছাড়া পরা হয় না। ডেইলি ওয়্যারে লাইটগোল্ড বেশি পছন্দ। ডায়মন্ড ও ভাল লাগে। গলায় একটা সোনার চেন এবং হাতে একটা রিং সবসময় থাকে। পুজোআচ্চার দিনেও হালকা গয়নাই পছন্দ। তবে বিয়ের সাজ হলে ট্রাডিশন্যাল একটু ভারী গয়নাই মানানসই হয়।

আরও পড়ুন-বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত ফাঁস

শাশ্বতী নন্দী
লেখিকা

ধনতেরাসে গয়না কিনি প্রত্যেকবার। এবার একটা কঙ্কন কিনেছি সাবেকি ডিজাইনের। অনেকে এই দিনটা শুভ বলে সোনা বা রুপো কেনেন। আমি কিন্তু গয়না পরতে ভালবাসি তাই কিনি। একটু ফিউশন গয়নাই আমার বেশি পছন্দ। সাবেকি ও আধুনিকতার মিশেল। মেয়ের জন্য অনেক গয়না কিনেছি ওর বিয়ের সময়। ওর আধুনিক হালকা গয়না পছন্দ হলেও আমি একটু ভারী গয়নাই কিনেছিলাম যেহেতু কনে সাজবে তাই। বিয়ের কনেকে সাবেকি সাজেই সবচেয়ে সুন্দর লাগে। সোনা ছাড়াও মুক্তোর গয়না দারুণ পছন্দ।

Latest article