অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে উপাচার্য, বিশ্বভারতীতে কেলেঙ্কারি, জামিনে মুক্ত অধ্যাপকের সাসপেনশন প্রত্যাহার

অভিজ্ঞমহলের বক্তব্য, এক্ষেত্রে উচিত ছিল পদ্ধতি মানা। এক্ষেত্রে সুমিত বসুর আবেদনের ভিত্তিতে কর্মসমিতি এই সাসপেনশন তুলে নেওয়ার একমাত্র অধিকারী।

Must read

সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন : সংগীত ভবনের সুমিত বসুর সাসপেনশন উঠে গেল। এক তফসিলি সম্প্রদায়ভূক্ত বিশ্বভারতীর ছাত্রকে বিদ্বেষমূলক অপমান ও হুমকির পর পুলিশ আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। বারো দিন জেল হেফাজতের পর তাঁর জামিন হয়। ঘটনার পরে বিলম্বিত সাসপেনশন হয় অধ্যাপকের। কিন্তু তড়িঘড়ি তাঁর সাসপেনশন তুলে নেওয়ায় সর্বত্র শোরগোল পড়ে যায়। এরপর এ ব্যাপারে জানতে কর্মসচিব অশোক মাহাতোকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

আরও পড়ুন-বাংলায় উন্নয়ন-প্রচারে সবুজসাথীর র‍্যালি

তবে সংগীত ভবনের অধ্যক্ষা মাধবী রুজ প্রথমে প্রায় স্বীকার করে নিলেও, এখনও জানি না, মিটিংয়ে ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেন। তবে সূত্রের খবর, বুধবার সুমিত বসু কাজে যোগ দেন। বিশ্বভারতীর নিজস্ব স্ট্যাটুটের চৌত্রিশের (বি) এক ধারা অনুযায়ী  নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কাল অনুযায়ী সাসপেন্ড থাকার কথা সংগীত ভবনের মণিপুর নৃত্যশিল্পী সুমিত বসুর।
বিশ্বভারতীর অলিন্দে ঘুরপাক খাচ্ছে একটি খবর যে ১০ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উপাচার্য বিশ্বভারতীতে নেই। তবে যাওয়ার আগে অধ্যাপক সুমিত বসুর সাসপেনশন তুলে নিয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটুউট কিংবা সিসিএস রুলের ক্ষেত্রেও এভাবে সাসপেনশন তোলা যায় না। সিসিএস রুলের ক্ষেত্রে ১০/৬ ধারা অনুযায়ী এভাবে সাসপেনশন তোলা যায় না বলে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। বিশেষত ক্রিমিন্যল কেসে অভিযুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটা সম্ভব নয়। সুমিত বসুর মামলা নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। তাই সুমিত বসুর সাসপেনশন তোলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। যদিও এ-ব্যাপারে অধ্যাপক সুমিত বসুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

আরও পড়ুন-চরম অন্তর্কলহ, চাঁচলে ধস বিজেপিতে

অভিজ্ঞমহলের বক্তব্য, এক্ষেত্রে উচিত ছিল পদ্ধতি মানা। এক্ষেত্রে সুমিত বসুর আবেদনের ভিত্তিতে কর্মসমিতি এই সাসপেনশন তুলে নেওয়ার একমাত্র অধিকারী। অথচ অধ্যাপকদের সাসপেনশনের পর কর্মসমিতির কোনও বৈঠক হয়নি বলে সূত্রের খবর। এখানেই বেনিয়ম ঘটেছে বলে ধারণা অভিজ্ঞ মহলের। যদিও এরকম বেনিয়ম আগেও ঘটেছে বর্তমান উপাচার্যর আমলে। এ-ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, একজন আইনের ছাত্র হিসেবে বলতে পারি, বিভাগীয় তদন্ত না করে সাসপেনশন তুলে নেওয়া আইনবিরুদ্ধ। এক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় অভিযুক্ত একজন শুধুমাত্র অধ্যাপক নন। তিনি তাঁরই ছাত্রের শিক্ষক। একজন তফসিলি সম্প্রদায়ভূক্ত ছাত্রকে অশালীন মন্তব্য করেছেন। প্রসঙ্গত, সুমিত বসুর  বিরুদ্ধে অভিযোগ,  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে জাতি-বিদ্বেষমূলক কথা ও হুমকির অভিযোগ এক তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের বিরুদ্ধে। বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র সোমনাথ সৌকে জাতিবিদ্বেষমূলক কথা ও হুমকির অভিযোগে কলকাতার মহেশতলা থেকে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ গ্রেফতার করে অধ্যাপক সুমিত বসুকে।  তারপর তাঁর জেল হেফাজত হয়। এরপর ১২ দিন বাদে কলকাতা হাইকোর্টে জামিন পান তিনি।

Latest article