বিরোধীদের কাছে যান, বুঝিয়ে তাদের ফেরান

বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। মঞ্চ থেকে কুণাল তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অধিকারী পরিবারকে।

Must read

প্রতিবেদন : শুধু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে নয়, এলাকায় যাঁরা বিরোধী রাজনীতি করে তাঁদের বাড়িতেও যেতে হবে। যাঁরা দূরে চলে গিয়েছেন, তাঁদের আবার বুঝিয়ে সুঝিয়ে তৃণমূলে ফিরিয়ে আনতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে মাটিতে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেই সঙ্গে দুই অধিকারী শুভেন্দু ও সৌমেন্দুকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন কুণাল।

আরও পড়ুন-হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। মঞ্চ থেকে কুণাল তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অধিকারী পরিবারকে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও তার পরিবার কীভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ও মানুষের সঙ্গে ‘বেইমানি’ ও ‘গদ্দারি’ করেছে, তা এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষকে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন কুণাল। সারদা ও নারদার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সিবিআইয়ের উচিত শুভেন্দু অধিকারীর কলার ধরে ওকে জেলে ঢোকানো। একাধিক দুর্নীতির মামলায় দু’-দু’বার কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীকে জেরা করেছে কাঁথি থানার পুলিশ৷ ১৪ অক্টোবর শুক্রবার ফের আরও একটি মামলায় তদন্তকারীদের জেরার মুখোমুখি হওয়ার জন্য সৌমেন্দুকে নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ। সৌমেন্দুকেও গ্রেফতারের জোরালো দাবি তোলেন কুণাল। এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর, চণ্ডীপুর সহ চারটি জায়গায় বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ সেই সভা থেকেই চেনা মেজাজে অধিকারী পরিবারকে নিশানা করেন কুণাল। অধিকারী পরিবারকে আক্রমণ করার পাশাপাশি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনটা করা উচিত, আর কোনটা করা উচিত নয়, তা নিয়েও তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে বেশ কিছু পরামর্শ দেন তৃণমূল মুখপাত্র। তিনি বলেন, এই জেলায় বিজেপি কোথায়? তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কমেনি। সিপিএমের ভোটগুলো বিজেপিতে গিয়েছে! বরং তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে! পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কোনও গন্ডগোল নয়৷ বিজেপি ও সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে যান। তাঁদের বুঝিয়ে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদন করুন৷

আরও পড়ুন-দুয়ারে মহাভোজ থেকে রেকর্ড আয় পঞ্চায়েত দফতরের

এদিন ভগবানপুরে ভীমশ্বরী হাইস্কুলে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি বলেন, তৃণমূলকে চোর বলেছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এখন তার ভাইকে বারবার পুলিশ থানায় ডেকে জেরা করছে। ১৮ লক্ষ টাকা খরচ করে রাশিয়ায় ফুটবল বিশ্বকাপ ও লন্ডনে ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেখতে গিয়েছিল। সেই টাকার উৎস কী? চোরের মায়ের বড় গলা। ভগবানপুরের এই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চণ্ডীপুরের বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি তথা এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা কাঁথি পুরসভার উপপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, চণ্ডীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ। ভগবানপুরের পর নন্দীগ্রাম লাগোয়া চণ্ডীপুরে আরও একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন কুণাল।

আরও পড়ুন-স্টুডিওপাড়ায় পুড়ে ছাই গুদাম

সেখানে তিনি বলেন, দল যাঁকে টিকিট দেবে সবাই মিলে তাঁকে জেতাতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্যক্তি নয়, দল বড়। ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক, তন্ময় ঘোষরা। এদিন ভগবানপুরের সভা চলাকালীন হঠাৎই ৬-৭ জন বিক্ষোভ দেখান। বক্তৃতা থামিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন কুণাল। তাঁদের কথা মন দিয়ে ধৈর্য ধরে শোনেন তিনি। পরে কুণাল বলেন, তাঁদের বক্তব্য তিনি দলের যেখানে জানানো দরকার সেখানে জানাবেন। তারপর সভা নির্বিঘ্নে শেষ হয়।

Latest article