এবার নতুন কিছু করব, কেউ চিরদিন চেয়ারে থাকে না: সৌরভ

নীরবতা ভাঙলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির চেয়ার থেকে ছিটকে যাওয়ার পর, এই প্রথমবার মুখ খুললেন তিনি।

Must read

প্রতিবেদন : অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির চেয়ার থেকে ছিটকে যাওয়ার পর, এই প্রথমবার মুখ খুললেন তিনি। বিসিসিআই অতীত বলে জানিয়ে সৌরভের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা, এবার হয়তো আরও বড় ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে। আর সৌরভের এই মন্তব্যের পর শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি ফের কোনও চমক দিতে চলেছেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা? ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এই মন্তব্য করে সৌরভ সব পথ খোলা রাখলেন।

আরও পড়ুন-ক্ষতিপূরণের দাবি

একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হয়েছেন সৌরভ। বৃহস্পতিবার শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে সেই অনুষ্ঠানে নানা মেজাজে দেখা গেল মহারাজকে। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সাফল্যের খতিয়ান যেমন তুলে ধরলেন, তেমনই আবার অভিমানের সুরে জানিয়ে দিলেন, কেউ চিরদিন চেয়ারে থাকতে পারে না। প্রত্যেককেই জীবনের কোনও না কোনও সময়ে প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। আবার পরক্ষণেই জানিয়ে রাখলেন, অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকায় তাঁকে দেখা যেতেই পারে!

আরও পড়ুন-রাজ্যে প্রথম লটারি বিক্রেতাদের সংগঠন

সৌরভ বলেন, ‘‘প্রত্যেক মানুষই শূন্য থেকে শুরু করে। আমি যখন ১৩ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছিলাম, তখন কল্পনাও করিনি দেশের হয়ে এতগুলো বছর খেলব। ক্যাপ্টেন হব। প্রশাসক হিসেবে আমার ভূমিকা শেষ। এবার হয়তো আমাকে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে। হয়তো আরও বড় কোনও ভূমিকায়। সেখানেও কিন্তু শূন্য থেকে শুরু করব।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কেউ চিরদিন প্রশাসক থাকে না। আমি পাঁচ বছর সিএবি-র প্রেসিডেন্ট ছিলাম। তিন বছর বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছি। তবে ক্রিকেট কেরিয়ারের ওই পনেরোটা বছর আমার জীবনের সেরা। তখন রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই কীভাবে সফল হব, সেটা ভাবতাম। কারণ রান করতে না পারলে দল থেকে ছিটকে যেতে হবে।’’

আরও পড়ুন-বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে বিজেপিকে আক্রমণ মন্ত্রীর

সৌরভের দার্শনিকসুলভ মন্তব্য, ‘‘নিজের উপরে বিশ্বাস রাখাটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক মানুষকেই জীবনে পরীক্ষায় বসতে হয়। কখনও কখনও প্রত্যাখ্যাতও হতে হয়।’’ তাঁর বাড়তি সংযোজন, ‘‘লর্ডসে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি কথা ভাবিনি। চেয়েছিলাম ১০ রান করে এগোতে। সেভাবেই কয়েক ঘণ্টা ব্যাটিং করার পর দেখি আমি নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে গিয়েছি। জীবনও তেমনই। ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হয়। সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম। সাফল্যের কোনও শর্টকাট নেই। কেউ একদিনে শচীন তেন্ডুলকর হয় না। প্রধানমন্ত্রীও হয় না।’’
এদিন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘুরিয়ে নিজের সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের মতো কঠিন সময়ে আমরা সফলভাবে আইপিএলের আয়োজন করেছি। কমনওয়েলথ গেমসে ভারতীয় মেয়েরা রুপো জিতেছে। ছেলেরাও বিদেশের মাটিতে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে। গোটা বিশ্ব এখন ভারতীয় ক্রিকেটকে সমীহের চোখে দেখে।’’

আরও পড়ুন-ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের দ্বিতীয় লক্ষ্যভেদ

ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে একঝাঁক তারকাকে কীভাবে সামলেছিলেন, তা নিয়েও স্মৃতিচারণ করেছেন সৌরভ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন একটা দলের অধিনায়ক হয়েছিলাম যেখানে অনেকেই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য ছিল। শচীন, রাহুল (দ্রাবিড়), অনিল (কুম্বলে), ভিভিএস (লক্ষ্মণ)। আমি সব সময় ওদের মতামতকে গুরুত্ব দিতাম। টিম মিটিংয়ে ওরা কোনও পরামর্শ দিলে, সেটা মেনে নিতাম।’’
সৌরভ আরও বলেন, ‘‘গ্রেট পঙ্কজ রায়ের পর জাতীয় ক্রিকেটে বাংলা থেকে কেউ সেভাবে জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছিল না। তবে আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি পূর্বাঞ্চলে ক্রিকেট প্রতিভার কোনও অভাব নেই। আমি অতীতে বিশ্বাস করি না। বর্তমানে বাঁচি। ভারতের হয়ে একশোরও বেশি টেস্ট খেলেছি। তবে লর্ডসের অভিষেক টেস্টে ব্যাট করার সময় যে মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ পেয়েছি, তা আর কোনও ইনিংস খেলে পাইনি।’’

Latest article