ডবল ইঞ্জিন-ডবল মুখ-প্রক্সি সরকার মেঘালয়ে পরিবর্তনের ডাক নেত্রীর

বুধবার এভাবেই মেঘালয়ে পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, মেঘালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার বদলাতে তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প

Must read

মণীশ কীর্তনিয়া, মেন্দিপাথার: আমি এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠনের শপথে আসব৷ এখানকার প্রক্সি সরকারকে সরিয়ে দিন। বুধবার এভাবেই মেঘালয়ে পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, মেঘালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার বদলাতে তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প। কারণ বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার, ডবল মুখোশের সরকার। তুরা লোকসভার অন্তর্গত মেন্দিপাথার বিধানসভার দিলপা আপাল প্লে-গ্রাউন্ডে তিলধারণের জায়গা ছিল না। প্রত্যন্ত এই পাহাড়ি অঞ্চল এদিন যে জনস্রোত দেখল তা ঐতিহাসিক। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখতে গিয়ে বললেনও সেকথা। এদিনের পর নিশ্চিতভাবে প্রচণ্ড চাপ বাড়ল এনপিপি ও বিজেপির। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সভায় উপস্থিত লাখো জনতাকে কার্যত জেতার শপথ করিয়ে নিলেন। মঞ্চে প্রায় দশ মিনিট ধরে চলল উই ওয়ান্ট তৃণমূল স্লোগান। নেত্রী বলছেন উই ওয়ান্ট, জনতা সমুদ্র গর্জনে উত্তর ফেরাচ্ছে তৃণমূল। মাঝে মধ্যে গুলিয়ে যাচ্ছিল এটা তৃণমূলের ২১ জুলাই কিংবা ব্রিগেডের সভা নয়তো! নেত্রী সহ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঘালয়ের ট্রাডিশনাল দো মে (মাথায় ব্যান্ড পালক সহ) এবং কোটিপ ( উত্তরীয়) পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এগুলি পরেই এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখেন দুজনে।

আরও পড়ুন-পুরুলিয়ায় বড় বিনিয়োগ

উপচে পড়া জনসভায় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনারা এখন রাজনৈতিক ভাবে ক্ষুধার্ত। জেনে রাখুন একমাত্র তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমরা লড়াই চালিয়ে যাই। নিজের লড়াইয়ের উদাহরণ দিয়ে মেঘালয়ে দলের নেতা-কমীদের উদ্বুদ্ধ করেন নেত্রী। তিনি বলেন, আমি বাম শাসন থেকে আমার লড়াই শুরু করেছি৷ কংগ্রেস সাহায্য করেনি। আমি একাধিকবার শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু আমি মাথা নিচু করিনি৷ রাজনীতি আমার পেশা নয়, রাজনীতি হল আমার প্যাশন। বাংলার সরকারের উন্নয়নের কথা বলেন। মেঘালয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এখানেও এই উন্নয়ন হবে।

আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটের জন্য নতুন ব্যালট বক্স কিনছে কমিশন

মেঘালয়ের কনরাড সরকারকে তোপ দেগে নেত্রী বলেন, গত ৫ বছরে এখানে সরকার কী করেছে? আপনাদের রিপোর্ট কার্ড কোথায়? বিজেপিকেও একহাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এরা টেলিপ্রম্পটার রেডি রাখে, আর সেখান থেকে দেখে স্পিচ পড়ে৷
এখানে গৌহাটি থেকে ডিফ্যাক্টো চিফ মিনিস্টার সরকার চালায়, প্রক্সি সরকার চলছে৷ এখানে অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ নেই৷ শিক্ষা-স্বাস্থ্য কিছুই নেই। আমরা আপনাদের ভাল সরকার উপহার দেব। আমরা এখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেব। এরপরই নেত্রীর সাফ কথা, বিজেপির দু-মুখো আচরণ দেখবেন৷ ভোটের সময় এক। ভোটের পরে এক। এখানে কোনও বহিরাগত আসবে না। এখানে ভূমিপুত্ররাই থাকবে, তারাই সরকার চালাবে।
বিজেপি এবার যা-ই প্রস্তাব দিক আপনারা আপনাদের মাথা নিচু করবেন না। এই রাজ্যের গর্ব ফেরাতে আপনাদের লড়াই করতেই হবে। প্রক্সি-বিজেপি সরকারকে এখান থেকে সরান৷ এরা একটা দুর্নীতিযুক্ত সরকার। স্পষ্ট বক্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

আরও পড়ুন-২৭ ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘি কেন্দ্রে নির্বাচন

বিজেপির অনেক টাকা আছে৷ তারা অনেক জায়গা থেকে টাকা নেয়৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এজেন্সি ব্যবহার করে৷ সবাই একত্রিত হোন৷ সবাই মিলে লড়াই করুন। এদিন মঞ্চে ডাঃ মুকুল সাংমা, চার্লস পিনগ্রোপ, মানস ভুঁইয়া, ডেরেক ’ও ব্রায়েন-সহ গারোর তৃণমূল প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে মুকুল সাংমার স্ত্রী ও মেয়েও ছিলেন। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সভায় ঢোকার সময় মেঘালয়ের ট্রাডিশনাল বাদ্যযন্ত্রের তালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে স্বাগত জানানো হয়। নেত্রী তাদের সঙ্গে তালে তালে পা মেলান। ডেকে নেন মুকুল সাংমা ও চার্লস পিনগ্রোপকে। সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অল্প সময়ের জন্য। সেখানেও কনরাড সরকারকে তোপ দেগে বলেন, আগে ওরা নিজেদের সরকারের পোস্টমর্টেম করুক।

Latest article