দলবদলুর রক্ষাকবচ কেন অপ্রাসঙ্গিক, আইন দিয়ে দেখাল তৃণমূল

বলা আছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া এফআইআর করা যাবে না। কিন্তু গ্রেফতারি এড়ানোর (নট টু অ্যারেস্ট) কোনও রক্ষাকবচ নেই।

Must read

প্রতিবেদন : কেন আগাম সুরক্ষা ও রক্ষাকবচ শুভেন্দু অধিকারীর মতো একজন অভিযুক্তকে, আর এফআইআর নিয়ে আসলে আদালতের মূল কথাটি ঠিক কী শুক্রবার তা আইন দিয়ে দেখিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, আদালতের দেওয়া রক্ষাকবচে কোথাও গ্রেফতার করা যাবে না একথা বলা নেই।

আরও পড়ুন-দ্বিতীয় দিনে জমজমাট চলচ্চিত্র উৎসব

বলা আছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া এফআইআর করা যাবে না। কিন্তু গ্রেফতারি এড়ানোর (নট টু অ্যারেস্ট) কোনও রক্ষাকবচ নেই। কুণালের কথায়, গ্রেফতারির মুখে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু। আসানসোলের মামলায় পুলিশ শুভেন্দুকে গ্রেফতার করতে পারে৷ একদিকে যখন আসানসোলের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় এক শিশু-সহ তিনজন পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে, তখন যার কম্বল-রাজনীতির জন্য এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সে মেতে রয়েছে নিজের জন্মদিনের মোচ্ছবে। বৃহস্পতিবার কলকাতার পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউসে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে নৈশভোজের এলাহি আয়োজন করেছিল লোডশেডিং অধিকারী। সেখানে উপস্থিত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব-সহ এ-রাজ্যের দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য বিজেপির অন্য নেতাদের ভোজ খাওয়ায় শুভেন্দু। কিন্তু কম্বলের লোভ দেখিয়ে ডেকে এনে যাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল, আরও যারা গুরুতর আহত হল তাদের দেখতে বা তাদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে একবারও যায়নি সেখানে। দিনভর শকুনির রাজনীতি করা নির্লজ্জ-বেহায়া-দু’কান কাটা-চোর-তোলাবাজ শুভেন্দু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে অকথ্য গালিগালাজ খাওয়ার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দৌত্য করতে নিজের জন্মদিনকে সামনে রেখে এখন ডিনার পলিটিক্সে নেমেছে। কিন্তু তাতেও নিজের দলের দিলীপ ও সুকান্তর তরফে কার্পেট বম্বিং অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন-হাইকোর্টে আবারও প্রশ্নের মুখে সিবিআই

শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফে শুভেন্দুকে আগাম সুরক্ষা কেন— এ-বিষয়ে মামলা করে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তার শুনানি তিন সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে যায়। অর্থাৎ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দেওয়া আগাম সুরক্ষা-সহ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর সংক্রান্ত বিষয়টি একইরকম থেকে যায়। এখানেই আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নতুন এফআইআর করার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হলেও কোনও ঘটনায় অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তি যদি আইনের ১৬৪ বা ১৬১ ধারা অনুযায়ী তৃতীয় কোনও ব্যক্তির নাম করে বয়ান দেয় তবে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য তার বিরুদ্ধে এফআইআর করার দরকার পড়ে না। তাকে এমনিই গ্রেফতার করা যায়। আমার নিজের জীবনে এ জিনিস আমি দেখেছি। ফলে পুলিশকে বলব, আসানসোলের ঘটনায় অবিলম্বে শুভেন্দু অধিকারীকে সমন করা হোক। না এলে তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। এর জন্য কোনও এফআইআর করার প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন-ফেব্রুয়ারির আগেই কিয়েভ দখলের ছক রুশ বাহিনীর

এদিন নিজের জীবনের উদাহরণ টেনে কুণাল বলেন, অর্ধেক মামলায় আমার নাম ছিল না। তবুও আমায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে শুভেন্দুর নাম এলে ওকে কেন গ্রেফতার করা যাবে না? শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতারের মুখে দাঁড়িয়ে। পুলিশকে বলব নতুন এফআইআর করা যাবে না। কিন্তু কেউ নাম বললে পুলিশ এফআইআর ছাড়াও গ্রেফতার করতে পারে। কেউ যদি মনে করে আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার, তাহলে ভুল ভাবছে। এফআইআর করা যাবে না মানে নট টু অ্যারেস্ট নয়। পুলিশের কাছে দাবি করব, আসানসোলের ঘটনার গুরুত্ব মাথায় রেখে অবিলম্বে শুভেন্দুকে সমন করা হোক। না এলে গ্রেফতার করা হোক।

Latest article