মেয়েবেলার খেলা

'চু কিত কিত' থেকে 'ওপেন টি বায়োস্কোপ, নাইন টেন টেলিস্কোপ', এলাটিং বেলাটিং, গুটি খেলার খবর জানে শুধুই আমাদের মেয়েবেলারা। ছিল না মোবাইল, ছিল না ল্যাপটপ শৈশবের সেই টুকরো আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে কেটে যেত কতশত আলসেমির দুপুর। জেটগতিতে বদলেছে যুগ আর বদলে গেছে শৈশবও। সেই মেয়েবেলার খেলারা আজ চুপচাপ চিলেকোঠায় বন্দি। লিখলেন কাকলি পাল বিশ্বাস।

Must read

আমাদের স্কুলের বিখ্যাত তেঁতুলতলায় ছিল অনেকটা ঘাসবিহীন জায়গা। টিফিনের সময় সবাই স্কার্ট থেকে বেল্ট খুলে কিত কিত খেলার জন্য জায়গা ধরতাম। তারপর কোনওক্রমে গোগ্রাসে টিফিন খেয়ে শুরু হত আমাদের মেয়েদের খেলা। চু কিত কিত, এলাটিং বেলাটিং, ওপেন টি বায়োস্কোপ আমাদের মেয়েবেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমন অনেক খেলার নাম। যে নামগুলো এযুগের শিশুদের কাছে সম্পূর্ণ অজানা। জেনারেশন ওয়াইদের স্মল ভার্সানরা ল্যাপটপ আর মোবাইলে গেম খেলতেই ভীষণ ব্যস্ত। শৈশব হারিয়েছে মোবাইলের আর কম্পিউটারের স্ক্রিনে। কিন্তু একটা সময় আমাদের মেয়েবেলায় মোবাইলই ছিল না। আর ল্যাপটপ বা কম্পিউটার তো সম্পূর্ণ অধরা ছিল আমাদের কাছে। তখন পড়ার ফাঁকফোকরে দুপুর জুড়ে চলত লুটোপুটি আর হুটোপুটি। আমরা কিত কিত ছাড়াও খেলতাম পুতুলখেলা রান্নাবাটি, ওপেন টি বায়োস্কোপ, এলাটিং বেলাটিং আরও কত কী। সময়ের সরণিতে আজ সেইসব খেলা বিলুপ্ত।

আরও পড়ুন-মেয়েদের কুস্তি কথা

কিত কিত খেলা
আমাদের মেয়েবেলার সবথেকে প্রিয় খেলা ছিল কিত কিত। আমরা এই খেলাটিকে কিত কিত খেলা বললেও, অঞ্চলভেদে এই খেলার বহু নাম আছে। আর সেগুলো হল এক্কাদোক্কা, সাতখোলা, চিড়িয়া, কুতকুত ইত্যাদি ইত্যাদি। তখনকার দিনে বাড়ির উঠোন, ছাদ, বারান্দা, কিংবা যেকোনও খোলা স্থানই পরিণত হত কিত কিত খেলার জায়গা রূপে।
মাটির হাঁড়ি বা কলসি ভাঙা, টালি ভাঙা প্রভৃতির টুকরো দিয়ে ঘুঁটি তৈরি করা হত। আর এটাই ছিল কিত কিত খেলার প্রধান উপকরণ।
মাটির উপর দাগ কেটে ছয় ঘর তৈরি করে বা আয়তাকার ঘরের মধ্যে মোট নয়টি ঘর তৈরি করে শুরু হত এই খেলা। এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে দাগ স্পর্শ না করে ওই ঘুঁটি নিয়ে যেতে হত। যদি ঘুঁটি ছোঁড়ার সময় নির্দিষ্ট ঘরে না পড়ত বা একপায়ে খেলার সময় পা বা ঘুঁটি দাগ স্পর্শ করত তবে নিয়ম অনুসারে খেলোয়াড় আউট হয়ে যেত এবং অপর খেলোয়াড় খেলার সুযোগ পেত। সে এক সত্যিই মজার খেলা ছিল।
তবে এই খেলা সৃষ্টির আদি মুহূর্তেও লুকিয়ে আছে এক ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস অনুযায়ী পঞ্চদশ শতাব্দীর পর থেকেই চাষযোগ্য জমির অভাব দেখা দিয়েছিল। এবং জমির চাহিদাও সেই সময় প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেই সময়ে জমির সূক্ষ্ম সীমারেখা ও মাপের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই খেলায় যে ঘর কেনা হয়, সেই ঘর কেনার মধ্যে ভূমি অধিকারের ছবি স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত। খেলায় দেখা যায় যে কেনা ঘরেই খেলোয়াড় তার দুটো পা ফেলতে পারে, এবং না-কেনা ঘর অর্থাৎ অপরের জমি যেটি, সেখানে সে এক পা ফেলে এবং সংকোচে সেই ঘর পার হয়। এই ঘরগুলির নাম এখন এক্কা, দোক্কা, তেক্কা ইত্যাদি হলেও বহু পূর্বে এগুলোর নাম ছিল ইরানি, জিরানি, কুলো, গঙ্গা ইত্যাদি। এই নামগুলি কিন্তু সবই ভূমি বা ভূমি সংক্রান্ত নাম। সুতরাং বেশ ভাল করেই বোঝা যায় যে এই কিত কিত খেলার মাধ্যমেই মধ্যযুগের ভূমিসংক্রান্ত ব্যবস্থার চিত্র উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন-মোহনবাগান শক্তিতে এগিয়ে,লড়াকু মনোভাবে ইস্টবেঙ্গল

পুতুলখেলা
‘লাজে রাঙা হল কনে বউ গো, মালা বদল হবে এই রাতে’। একটি বিখ্যাত সিনেমার এই গানটার কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। দৃশ্যটা ছিল পুতুলের বিয়ের একটি দৃশ্য। এক বন্ধু তার ছেলে পুতুলের সঙ্গে অন্য বন্ধুর মেয়ে পুতুলের বিয়ে দিচ্ছিল। পুতুলগুলোকে সত্যি সত্যি বর-কনে সাজিয়ে মণ্ডপ করে বিবাহবন্ধনে বাঁধছিল। আর এই পুতুলের বিয়ে দেওয়াটাও ছিল আমাদের মেয়েবেলার একটি অসাধারণ খেলা। সে সময় সবার কাছে অনেক ধরনের পুতুল থাকত। আর সেই পুতুল নিয়ে গড়ে উঠত সংসার, মেয়েবেলার সংসার। সন্তান লালনপালন করার মতোই এই পুতুলগুলোকে সবাই লালনপালন করত। তাদেরকে আদর-যত্ন করে খাইয়ে দাইয়ে ঘুম পাড়ানো থেকে শুরু করে সুন্দর করে সাজানো, শাসন করা সবকিছুই চলত এই পুতুলখেলার মধ্য দিয়ে। এই পুতুলখেলার মাধ্যমেই সেই সময় পারস্পারিক সহমর্মিতা, বন্ধুত্ব, মানবিক সম্পর্কের গভীরতার বীজ বপন হয়ে যেত ছোট্ট ছোট্ট মনগুলোতে। তবে এখনকার দিনে পুতুল নিয়ে আর খেলা হয় না। পুতুল হয়ে উঠেছে সকলের সংগ্রহ বস্তু।
তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে পুতুল খেললে নাকি বেশি মাথা খোলে। কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক দাবি করেছিলেন যে শিশুদের মস্তিষ্কের পোস্টেরিয়র সুপিরিয়র টেম্পোরাল সালকাস (পিএসটিএস) পুতুল খেললে যতটা উদ্দীপ্ত হয় ভিডিও গেম বা মোবাইল খেলার সময় অতটা হয় না। আর গবেষকরা আরও দাবি করেছেন যে এর ফলে মানবদেহে সহমর্মিতা ও সামাজিকতার বিকাশ ঘটে।

আরও পড়ুন-আর কত বঞ্চিত হব আমরা!

টোপাভাতি বা রান্না বাটি খেলা
পুতুলখেলার মতোই আমাদের মেয়েবেলার অন্যতম প্রিয় খেলা ছিল রান্নাবাটি বা টোপাভাতি নামক খেলাটি। এই খেলাটি খেলার সময় মায়ের পুরনো কাপড় টাঙিয়ে অথবা গাছের তলায় ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হত খেলাঘর। আর এই খেলাঘরেই গড়ে উঠত মেয়েবেলার রান্নাঘর। এই রান্নাঘরে থাকত ছোট ছোট হাঁড়ি, কলসি, কড়াই, উনুন ইত্যাদি ইত্যাদি। বাজার আসত আশপাশের জঙ্গল থেকে। সে সময় একরকম লুচিপাতা পাওয়া যেত, সেই লুচি পাতা দিয়ে তৈরি হতে লুচি। ইটের টুকরো ঘষে ঘষে তৈরি করা হত হলুদ। এরপর চলত কাল্পনিক রান্না। রান্না শেষ হলে সেই রান্না সবাই মিলে হাপুস হুপুস করে খাওয়াও হত। সবাই এমন ভাব করতাম যেন সত্যিকারের রান্না খাচ্ছি। আমাদের মেয়েবেলায় এই রান্নাবাটি খেলাটা দারুণ আনন্দ দিত। অবশ্য এখনকার দিনেও অনেক বাচ্চা রান্নাবাটি খেলে। রান্নাবাটি খেলা মেয়েবেলার জীবনের অপার আনন্দময় একটি খেলা ছিল।
ওপেন টি বায়োস্কোপ
আমাদের মেয়েবেলার অন্যতম আকর্ষণীয় খেলা ছিল ওপেন টি বায়োস্কোপ। এই খেলাটি খেলার সময় মজার একটি ছড়া সবাই বলত। আর সেই ছড়াটি হচ্ছে—
‘‘ওপেন টি বায়োস্কোপ, নাইন টেন টেলিস্কোপ
চুলটানা বিবিয়ানা, সাহেব বিবির বৈঠকখানা
সাহেব বলেছে যেতে, পান সুপারি খেতে
পানের আগায় মরিচ বাটা, স্প্রিংয়ের চাবি আঁটা
যার নাম মণিমালা, তাকে দেব মুক্তার মালা।’’

আরও পড়ুন-রাজ্যকে জল জীবন মিশন প্রকল্পের ১ হাজার কোটি টাকা দিল কেন্দ্র, মুখ্যমন্ত্রীর চাপের কাছে নতিস্বীকার

যাই হোক, এই খেলাটি খেলার সময় দু’জন মেয়ে অল্প দূরত্বে দাঁড়িয়ে দু’জনে দু’জনের হাত দুটো ধরে সেটা উঁচু করে রাখে। দেখতে অনেকটা মন্দিরের চূড়ার মতো অথবা তোরণের মতো লাগে। খেলার অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা পরস্পরের কাঁধে হাত রেখে রেলগাড়ির মতো সারিবদ্ধ হয় এবং ছড়াটি বলতে বলতে সেই তোরণের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে থাকে। ছড়াটি শেষ হওয়ার মুহূর্তে যে ওই তোরণের মধ্যে থাকে সে তখন বন্দি হয়ে যায়। এইভাবে একে একে সবাই বন্দি হয়ে খেলাটি শেষ করে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই মেয়েবেলার খেলাটি প্রায় হারিয়ে যেতেই বসেছে। তবে ল্যাপটপ, মোবাইল-বিহীন যুগের এই খেলাটি  আমাদের মেয়েবেলার অন্যতম আকর্ষণীয় খেলা ছিল।

এলাটিং বেলাটিং 
‘এলাটিং বেলাটিং সইলো, কীসের খবর আইলো’ খেলায় মেয়েরা দু’দলে বিভক্ত হয়ে মাটিতে অঙ্কিত একটি রেখার দু’দিকে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াত। খেলার শুরুতে একদল মেয়ে দাগের দিকে দু’কদম এগিয়ে ছড়ার প্রথম লাইন ‘এলাটিং বেলাটিং সইলো ’ বলে আবার পেছনে সরে আগের জায়গায় গিয়ে দাঁড়াত। দ্বিতীয় দল একই ভাবে এগিয়ে এসে ‘কিসের খবর আইলো’ বলে পরের লাইনটি বলত। এভাবে কথোপকথন অর্থাৎ ছড়ার মধ্য দিয়ে খেলাটি চলতে থাকত। শেষ লাইনটি ‍‘নিয়ে যাও নিয়ে যাও বালিকা’ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় পক্ষের একটি বালিকাকে ধরে টানাটানি শুরু করা হত। তাকে ধরে রাখতে বা টেনে নিতে পারলে প্রথমবার খেলা শেষ হত।

আরও পড়ুন-৮ ফেব্রুয়ারি পেশ রাজ্য বাজেট

গুটি খেলা
আমাদের মেয়েবেলার আরও একটি প্রিয় খেলা ছিল গুটি খেলা। এই খেলাটি খেলতে গেলে ইট বা পাথরের পাঁচটি গোল টুকরো লাগে। খেলার শুরুতে এই ইট বা পাথরের টুকরোগুলো মাটিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর মাটিতে ছড়ানো সেই টুকরোগুলোর একটি হাতে নিয়ে উপরদিকে ছুঁড়ে দেয়া হয়, এবং সেই উপরে ছোঁড়া গুটিটি মাটিতে পড়ার আগেই সেটিকে ধরে নিতে হয় এবং তার আরও একটি গুটি উপরে ছুঁড়ে দেয়া হয়। আর এইভাবেই চলে খেলা। এই খেলাটি খেলার সাথে সাথে মুখে মুখে একটি ছড়া কাটতে হয়। এই গুটি খেলাটি একাই, দোলাই, তিনাই, চারাই ও পাঁচাই এই পাঁচটি স্তরে বিভক্ত থাকত। প্রথমবার একটি একটি করে গুটি মাটি থেকে তোলা হত এবং তারপরে ক্রমান্বয়ে দুটি থেকে পাঁচটি করে গুটি মাটি থেকে তোলা হত এবং একটি গুটি উপরে উঠিয়ে পাঁচটি গুটি মাটি থেকে তুলে খেলা শেষ হত। এই খেলাটি নির্ভর করত হাতের ক্ষিপ্রতার ওপর। মেয়েবেলায় খুব অল্প জায়গার মধ্যে অথবা ঘরের মেঝেতে বসেই এই খেলাটি খেলা হত। আর সেই কারণে বাইরে বৃষ্টি পড়লে মেয়েবেলায় ঘরের মধ্যে জমে উঠত এই খেলাটি।
ডাংগুলি
এই খেলাটি ছেলেদের খেলা হলেও বলতে গেলে ডাংগুলি হচ্ছে এক ধরনের গ্রাম্য ক্রিকেট। ক্রিকেটে যেমন ব্যাট-বল থাকে ডাংগুলিতে তেমনি ডান্ডা আর গুলি থাকে। দুটো দলে ভাগ হয়ে এই খেলা খেলতে হয়। খেলাতে যে ডান্ডাটি লাগে সেটি হচ্ছে হাত দেড়েক লম্বা একটি লাঠি। আর এর সাথে লাগে তিন- চার ইঞ্চির একটি গুলি যেটা আবার ফুলুক বা ফুত্তি নামেও পরিচিত। এই খেলাটিতে প্রথমে মাঠে একটি ছোট্ট গর্ত করা হয়। সেই গর্তটিতে গুলিটি রাখা হয়। প্রথম যে দল দান পায় তাদের মধ্যে একজন সেই গুলিটিকে বড় ডান্ডাটার আগা দিয়ে যতদূর ছোঁড়া যায় ততটা দূর ছুঁড়ে মারে। অপর দলের কেউ যদি সেটা ক্যাচ নিয়ে নেয় তাহলে যে গুটিটি ছুঁড়ে ছিল সে আউট হয়ে যায়। আর যদি তারা ক্যাচ না নিতে পারে তাহলে সেই গুলিটা নিয়ে গর্তের দিকে ছুঁড়ে মারে। এবার সেই খেলোয়াড় তার হাতে রাখা ডান্ডাটিকে দিয়ে ছুঁড়ে দেওয়া গুলিটিকে জোরে আঘাত করে। দ্বিতীয়বার যেখানে গিয়ে গুলিটি পড়ে সেখান থেকে ডান্ডা দিয়ে গর্তের দূরত্ব মাপা হয়। দু’পক্ষই এইভাবে খেলাটা খেলে। আর এই খেলার নিয়ম অনুযায়ী যে পক্ষ গোনাগুনিতে বেশি নম্বর পায় সেই পক্ষই খেলাটি যেতে।

আরও পড়ুন-ষড়যন্ত্রের বেলুন ফাটিয়ে দিল পর্ষদ

গোলাপ টগর
মেয়েবেলায় মিষ্টি খেলা গোলাপ টগর। খেলাটি খেলতে দুটি দলে ভাগ হয়ে যেতে হত। প্রতিটি দলে একজন করে রাজা থাকত। সে তার দলের প্রত্যেকের এক-একটি করে নাম দিত। এবার খেলার নিয়ম অনুযায়ী একদলের রাজা অপর দলের কারওর চোখ ধরে তার দলের একজনের নাম ধরে ডাকত। যাকে রাজা ডেকেছে সে আস্তে আস্তে এসে যার চোখ ধরা হয়েছে তার কপালে একটা ছোট্ট করে টোকা দিয়ে আবার নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ত। এরপরে রাজা চোখ খুলে দিত এবং যার চোখ ধরেছিল তাকে বলতে হত কে তার কপালে টোকা মেরেছে। যদি সে সঠিক জনকে দেখাতে পারত তাহলে তাদের দল জিতে যেত আর যদি না পারত তাহলে অপর দল জিতে যেত। যে জিতত সে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বসত। এইভাবে যে দল আগে মাঝখানের সীমারেখা অতিক্রম করতে পারত সেই দলই জিতত।
আজকালকার দিনের বাচ্চারা এই সমস্ত খেলার সঙ্গে পরিচিত নয়। কারণ তারা সবসময় মেতে থাকে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার গেম অথবা মোবাইল গেমে। আর সেই কারণেই কালের বিবর্তনে একদিন হয়তো চিরতরে হারিয়ে যাবে আমাদের মেয়েবেলার এই বহুল প্রচলিত খেলাগুলো।

তাস খেলা
আগেকার দিনের গৃহবধূদের জীবন ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ তাঁরা ছিলেন অন্তঃপুরবাসিনী। আর সেই কারণেই তাঁরা অনেকেই সময় কাটানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন তাসের মতো খেলা। দুপুরবেলায় খাওয়া-দাওয়ার পর একান্নবর্তী পরিবারের মহিলারা পান মুখে দিয়ে তাস খেলতে বসতেন। আর সেটা ছিল তাঁদের একদম নিজের পরিসর। সে সময় তাঁরা টুয়েন্টি নাইন থেকে শুরু করে নানা ধরনের খেলা খেলতেন।
পঞ্চদশ শতকে তাস খেলার উদ্ভাবন ঘটেছিল। এবং চিনে প্রথম এই খেলার প্রচলন শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। সাং রাজবংশের প্রথম রাজা ছিলেন টাং। এই টাঙের রাজত্বকালে অন্তঃপুরবাসী মহিলারা তাস খেলেই সময় কাটাতেন।

Latest article