সিপিএম এখনও তেমনই আছে

কয়লা যায় না ধুলে, স্বভাব যায় না মলে। প্রচলিত এই প্রবাদের সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত সিপিএমের আচার-আচরণ। লিখছেন উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার কাউন্সিলর শ্রীপর্ণা রায়

Must read

বর্তমানে অস্তিত্বের সংকটে বিপন্ন এই রাজ্যের ক্ষমতাহীন সিপিএম পার্টি একটা সতীপনা মুখোশের আড়ালে তাদের অতীতের ক্ষমতাসীন মুখের নৃশংসতাকে লুকোনোর আপ্রাণ চেষ্টা করলেও সময়ে সময়ে তার সেই নির্মম রূপ বেআব্রু হয়ে পড়ে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ জয়নগর। গ্রামবাংলার বাম-অত্যাচারিত মানুষের দীর্ঘশ্বাসযুক্ত স্মৃতিকথনে একটি বহুল প্রচলিত বাক্য ‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে আর লাল পার্টি সুযোগ পেলেই মানুষ মারে’ আজও যে প্রাসঙ্গিক তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল বাংলার সিপিএম!!

আরও পড়ুন-পূর্বিতায় তিন ঘণ্টা জেরা প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎকে

প্রমাণ করে দিল বাংলার সাধারণ মানুষের রক্তপিপাসু সিপিএম মরে নাই বরং বিজেপি ও আইএসএফ নির্দেশিত যৌথ মঞ্চের ভাড়াটে কুশীলব হয়ে জয়নগরের মতন নৃশংস ঘটনা বাস্তবায়নে তারা এখনও সক্ষম। মরিচঝাঁপি, বিজন সেতু, সাঁইবাড়ি, কান্দুয়া, ধানতলা, বানতলা, সূচপুর, ছোট আঙারিয়া, নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, নেতাইয়ের মতন গণহত্যার রক্তস্নাত খুনি, ধর্ষক সিপিএম ক্ষমতা হারিয়ে এক্কেবারে সাধু হয়ে যাবে এটা বাংলার একটা মানুষও বিশ্বাস করে না বলেই পরপর তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার সচেতন মানুষ সিপিএমকে শুধু ত্যাজ্য করেনি ক্রমান্বয়ে শূন্য করে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে দিয়েছে। সিপিএমের নির্মম নৃশংসতা মরিচঝাঁপির ইতিহাস, যে ইতিহাস বলে অসহায় সর্বস্বান্ত উদ্বাস্তু মানুষগুলোকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে জঙ্গলে ঘিরে নির্বিচারে গুলি করে মারার নিষ্ঠুর ক্ষমতার অপর নাম সিপিএম!!

আরও পড়ুন-বিশাখাপত্তনম বন্দরে আগুনে ভস্মীভূত ৩৫টি মাছ ধরার নৌকা, কয়েক কোটির ক্ষতি আশঙ্কা

সিপিএমের নির্মম নৃশংসতা সাঁইবাড়ির গণহত্যার ইতিহাস, যে ইতিহাস বলে নিহত ছেলের রক্তমাখা ভাত মাকে জোর করে খাওয়ানোর নির্মম নির্লজ্জ ক্ষমতার অপর নাম সিপিএম!! সিপিএমের নির্মম নৃশংসতা বিজন সেতুর আনন্দমার্গী গণহত্যার ইতিহাস, যে ইতিহাস বলে সাধুদের ছেলেধরা অপবাদ দিয়ে জীবন্ত জ্বালিয়ে পৈশাচিক উল্লাসে মত্ত ক্ষমতার অপর নাম সিপিএম!! সিপিএমের নির্মম নৃশংসতা কান্দুয়া, সূচপুর, ছোট আঙারিয়া, নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ের গণহত্যার ইতিহাস, যে ইতিহাস বলে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী গণকণ্ঠকে নির্মম নিষ্ঠুরতায় চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতার অপর নাম সিপিএম!! সিপি এমের নির্মম নৃশংসতা ধানতলা, বানতলা সিঙ্গুরের ধর্ষণ ও খুনের ইতিহাস, যে ইতিহাস বলে এলাকা দখলে অথবা প্রভাব বজায় রাখতে দলীয় ক্যাডারদের খুল্লামখুল্লা বুক চিতিয়ে ধর্ষণ ও খুনের লাইসেন্স দেওয়া ক্ষমতার অপর নাম সিপিএম!!

আরও পড়ুন-ভোটের রাজস্থান: ফৌজদারি অপরাধে এগিয়ে বিজেপিই

এই রাজ্যের অতীতের সেই খুনি ধর্ষক সিপিএমের ক্যাডারকুলের সিংহভাগ যারা দুঃস্বপ্নেও এখনও ভাবতে পারে না তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে বেঁচে আছেন এবং বিশ্বাস করেন না বর্তমান সিপিএম এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে হঠাতে সক্ষম তারাই বাংলার বর্তমান বিজেপি ও তাদের দোসর আইএসএফের সিংহভাগ। সবমিলিয়ে অতীতের খুনি হার্মাদ সিপিএমের বর্তমান ককটেল সংস্করণ হল সিপিএম, বিজেপি ও আইএসএফ। যার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য হল সিপিএমের খুন-ধর্ষণের রাজনীতি, বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনীতি এবং আইএসএফের মৌলবাদী রাজনীতি। এই ককটেল হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি জয়নগরের ঘটনায় উৎসাহিত হয়েছে, সম্ভাবনার বীজ বপন করেছে বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, যার ফল আগামীতে মারাত্মক ও ভয়ংকর হতে পারে যদি না সময় থাকতে এই খুনি ককটেল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন-চেয়েছিলাম কাপ হাতে নিক দ্রাবিড়

বারো বছর বাংলার শাসনক্ষমতা থেকে দূরে সরে ক্ষমতায় থাকা চৌত্রিশ বছরের ইচ্ছেমতন মানুষ খুন ও ধর্ষণ করার অভ্যাস একেবারে যে ভুলে যায়নি বাংলার সিপিএম বরং তলে তলে যে সেই অভ্যাসে ভালমতন শান দিয়েছে তা জয়নগরের ঘটনায় প্রমাণিত। সারা রাজ্যে সাত শতাংশে অবশিষ্ট হয়ে যাওয়া হার্মাদরা জয়নগরে খুনের রাজনীতি করতে সক্ষম হয়েছে কারণ তাদের লুক্কায়িত শাণিত অস্ত্রে ভরসার হাত রেখেছে স্থানীয় বিজেপি ও আইএসএফ এককথায় যারা সিপিএমেরই রক্তবীজ, ঐ ক্ষমতা হারানো সিপিএমের ঘর ছেড়ে আসা সাতাশ শতাংশ কনভার্টেড হার্মাদ। জয়নগরের ঘটনাকে তাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখলে বড় ভুল হবে। জয়নগর আসলে আগামী লোকসভা ভোটের আগে সম্মিলিত চৌত্রিশ শতাংশ অতৃপ্ত খুনি আত্মার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া প্রতিহিংসার উদাহরণ যাকে সামান্যতম উপেক্ষা করলে বাংলাবাসীর দিনলিপিতে আবারও খুন-ধর্ষণের রোজনামচা অবধারিত।

আরও পড়ুন-কাপ না জিতলেও দল নিয়ে গর্ব হচ্ছে : রোহিত

জয়নগরে বিজেপি আর আইএসএফের বদ্যানতায় মাটির তলায় একটু জমি ফিরে পেয়েই নিজেদের পুরোনো মেজাজে মানুষ খুনের রক্তাক্ত পেশায় নেমে পড়েছে মাকু- হার্মাদেরা। অস্তিত্ব সঙ্কটের খাদের কিনারায় দাঁড়িয়েও এদের রক্তের হোলিখেলায় কোনও সঙ্কোচ নেই, বিরাম নেই!! সুযোগ পেলেই শত্রুকে নিকেশ!! ইতিহাস এদের ক্ষমা করেনি, বর্তমান এদের শূন্য করেছে, আগামী এদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেবে তবুও এদের রক্তের পিপাসা মিটবে না। অবশ্য যাদের কাছে মানুষকে শাস্তি দেওয়ার সহজ পদ্ধতি জ্যান্ত কইমাছ মুখে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে চেপে ধরা, হাত থেকে কবজি কেটে নেওয়া, মানুষকে তটস্থ রাখার সহজ পদ্ধতি পুকুরের জলে বিষ ঢেলে দেওয়া অথবা ধানের গোলায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া, মানুষকে ভয় দেখানোর সহজ পদ্ধতি বাড়িতে সাদা থান শাড়ি পাঠানো, তাদের কাছে মানুষের জীবনের মুল্য যে শূন্য হবে সেটাই স্বাভাবিক!!

আরও পড়ুন-মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভোটে রামস্বামীর মুখে হিন্দুত্ব

যাদের রক্তাক্ত ইতিহাস ডি সি (পোর্ট) বিনোদ মেহতার নৃশংস খুন, ভিখারি পাসোয়ানের চিরকালীন নিরুদ্দেশ এবং মনীষা মুখোপাধ্যায়ের স্থায়ী উধাও হয়ে যাওয়ার মতন ভয়ঙ্কর ঘটনায় সমৃদ্ধ তাদের আপাত সাধুরূপ শুধু সময়ের অপেক্ষায় মাত্র, সুযোগ পেলেই আমিনুলের মতন হাজার হাজার কমরেড হার্মাদদের দল সারা বাংলার মাটিকে আবার নিয়মিত রক্তে রাঙা করতে দ্বিতীয়বার ভাববে না। তাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পাড়ার চিহ্নিত কমরেড হার্মাদদের এখন থেকে দেখলেই চিল্লিয়ে বলুন খুনি…খুনি…খুনি এবং পাড়ার ও মহল্লার সমস্ত শুভ কাজ থেকে এদের দূরে রাখুন। খুনিদের কোনও মাফ নেই। অঙ্কুরেই বিনিষ্ট করে দিতে হবে এই সম্মিলিত বত্রিশ শতাংশের রক্তাশ্রয়ী রাজনীতি। বাংলার সচেতন মানুষের কাছে অবশ্য এটা প্রত্যাশিত কারণ গত বারো বছর ধরে তারা ধারাবাহিকভাবে এই কাজটাই সুচারুভাবে করে আসছেন।

Latest article